দামোদর এর চড়ে চোলাই মদ তৈরী , প্রকাশ‍্যে চলছে রমরমা কারবার : হুঁশ নেই প্রশাসনের

1st July 2020 9:55 pm বর্ধমান
দামোদর এর চড়ে চোলাই মদ তৈরী , প্রকাশ‍্যে চলছে রমরমা কারবার : হুঁশ নেই প্রশাসনের


পার্থ ব‍্যানার্জী ও মহঃ খান ( জামালপুর ) :  বিষ মদ কান্ডে একাধিকবার সরগরম হয়েছে রাজ‍্যের নানা প্রান্ত । প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার পরে নজরদারি চালাবার আশ্বাস দিলেও তা যে শুধু কথার কথাই তার জলজ‍্যান্ত প্রমাণ ধরা পড়লো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের রেরুগ্ৰাম এর হৈবৎপুরে ।  চোলাই কারবারিরা এখনও দিনের আলোয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হৈবতপুর এলাকার দামোদরের চড়ে দেদার তৈরি করছে চোলাই মদ। কার্যত দামোদরের চড়ই এখন হয়ে উঠেছে চোলাই মদ তৈরির নিরাপদ  শিল্প তালুক । বিভিন্ন রাসায়নিক সহযোগে তৈরি সেই মদ জেলার বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি ভিন জেলাতেও পাচার হয়ে যাচ্ছে । 


    

জামালপুর ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম হৈবতপুর।এই গ্রামের এক পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ।সেই দামোদরের বিস্তির্ণ চড় এখন ঢাকা পড়েছে ঝোপ জঙ্গলে।নির্জন ওই ঝোপের মাঝখানে  বড় বড় উনান জ্বালিয়ে সারাদিন ধরে দলে দলে চোলাই কারবারীরা তৈরি করছে চোলাই মদ। এই খবর সংগ্রহ করতে বুধবার বেলায় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা হানাদেয়  দমোদরের চড়ের ওই ঝোপে।তখনই মদ তৈরি  ফেলে রেখে একের পর এক ছুটে পালায় চোলাই কারবারীরা।সেখানকার বিস্তির্ণ ঝোপ জঙ্গলে ঘুরে দেখাযায় নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর জ্বলছে উনান। সেই সব উনানে বড় বড় হাঁড়িতে ফুটিয়ে তৈরি হচ্ছিল চোলাই  মদ।তারই আশে পাশে পড়ে থাকতে দেখায়ায় একাধীক টিনের ড্রামে ভরে রাখা গুড়ের পচাই , ইস্ট ,ইউরিয়ার বাট ও বেশকিছু বড় আকারের টাবলেট।এই সব দেখেই স্পষ্ট হয়েযায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এই সকল রাসায়নিক ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছিল চোলাই মদ । 

বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের হৈবতপুর গ্রামের সদস্য প্রতিভা ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন ,“দীর্ঘদিন ধরেই কিছু লোক দামোদরের চড়ে ঝোপ জঙ্গলের মধ্যে চোলাই মদ তৈরি চালিয়ে যাচ্ছে ।এরজন্য এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে ।প্রতিভাদেবী জানান ,এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার জন্য একাধীকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে । কোন কোন সময়ে পুলিশ ও আবগারী দপ্তরের লোকজন ওই জায়গায় হানা দেয়।তারা চোলাই কারবারীদের কাউকে কাউকে তুলে নিয়েযায়। আবার তারা  ছাড়াও পেয়ে যায়।তাই দামোদরের চড়ে মদতৈরি চলছেই ।পঞ্চায়েত সদস্য আরও বলেন ,আমরা চাই প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে দামদরের চড়ে চোলাই মদ তৈরি বন্ধ করুক। ”  হৈবতপুর গ্রামের অপর বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ , দিব্যেন্দু দলুই প্রমুখরা বলেন,তাঁদের এলাকায়  দামোদরের চড়ে ঝোপ জঙ্গলে মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চোলাই মদ তৈরি চলছেই ।দিব্যেন্দু বলেন ,‘যেসব দ্রব্য ব্যবহার করে ওই মদ তৈরি হয় তা মানব শরীরের পক্ষে হানিকর বলেই তারা মনে করেন।সেই কারণে এই চোলাই মদ খেয়ে  যদি শান্তিপুর কিংবা সংগ্রামপুরের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলেও অবাক হবার কিছু  থাকবে না। ’
অপর আর এক বাসিন্দা দেবাশিষ ঘোষ বলেন ,‘দীর্ঘদিন ধরেই হৈবতপুর এলাকায় দামোদরে অবৈধ বালি খাদান ও চোলাই মদের কারবার চলেছে ।ওই চোলাই মদের বর্জ ফেলা হচ্ছে দামোদরে । তার ফলে দামোদরেও দূষণ বাড়ছে ।প্রশাসন কড়া পদক্ষেন না নিলে এইসব অবৈধ কাজ কোন দিনও বন্ধ হবেনা।’

জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন ,“দামোদরের চড়ে অবাধে চোলাই মদ তৈরি হচ্ছে এমন ঘটনা জানা নেই । তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি ।ঘটনা যদি সত্যি হয় তবে সবিস্তার উচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে ।  পাশাপালি কড়া আইনানুগ পদক্ষেপও  নেওয়া হবে । ”

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।