পার্থ ব্যানার্জী ও মহঃ খান ( জামালপুর ) : বিষ মদ কান্ডে একাধিকবার সরগরম হয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্ত । প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার পরে নজরদারি চালাবার আশ্বাস দিলেও তা যে শুধু কথার কথাই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ ধরা পড়লো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের রেরুগ্ৰাম এর হৈবৎপুরে । চোলাই কারবারিরা এখনও দিনের আলোয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হৈবতপুর এলাকার দামোদরের চড়ে দেদার তৈরি করছে চোলাই মদ। কার্যত দামোদরের চড়ই এখন হয়ে উঠেছে চোলাই মদ তৈরির নিরাপদ শিল্প তালুক । বিভিন্ন রাসায়নিক সহযোগে তৈরি সেই মদ জেলার বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি ভিন জেলাতেও পাচার হয়ে যাচ্ছে ।
জামালপুর ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম হৈবতপুর।এই গ্রামের এক পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ।সেই দামোদরের বিস্তির্ণ চড় এখন ঢাকা পড়েছে ঝোপ জঙ্গলে।নির্জন ওই ঝোপের মাঝখানে বড় বড় উনান জ্বালিয়ে সারাদিন ধরে দলে দলে চোলাই কারবারীরা তৈরি করছে চোলাই মদ। এই খবর সংগ্রহ করতে বুধবার বেলায় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা হানাদেয় দমোদরের চড়ের ওই ঝোপে।তখনই মদ তৈরি ফেলে রেখে একের পর এক ছুটে পালায় চোলাই কারবারীরা।সেখানকার বিস্তির্ণ ঝোপ জঙ্গলে ঘুরে দেখাযায় নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর জ্বলছে উনান। সেই সব উনানে বড় বড় হাঁড়িতে ফুটিয়ে তৈরি হচ্ছিল চোলাই মদ।তারই আশে পাশে পড়ে থাকতে দেখায়ায় একাধীক টিনের ড্রামে ভরে রাখা গুড়ের পচাই , ইস্ট ,ইউরিয়ার বাট ও বেশকিছু বড় আকারের টাবলেট।এই সব দেখেই স্পষ্ট হয়েযায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এই সকল রাসায়নিক ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছিল চোলাই মদ ।
বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের হৈবতপুর গ্রামের সদস্য প্রতিভা ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন ,“দীর্ঘদিন ধরেই কিছু লোক দামোদরের চড়ে ঝোপ জঙ্গলের মধ্যে চোলাই মদ তৈরি চালিয়ে যাচ্ছে ।এরজন্য এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে ।প্রতিভাদেবী জানান ,এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার জন্য একাধীকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে । কোন কোন সময়ে পুলিশ ও আবগারী দপ্তরের লোকজন ওই জায়গায় হানা দেয়।তারা চোলাই কারবারীদের কাউকে কাউকে তুলে নিয়েযায়। আবার তারা ছাড়াও পেয়ে যায়।তাই দামোদরের চড়ে মদতৈরি চলছেই ।পঞ্চায়েত সদস্য আরও বলেন ,আমরা চাই প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে দামদরের চড়ে চোলাই মদ তৈরি বন্ধ করুক। ” হৈবতপুর গ্রামের অপর বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ , দিব্যেন্দু দলুই প্রমুখরা বলেন,তাঁদের এলাকায় দামোদরের চড়ে ঝোপ জঙ্গলে মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চোলাই মদ তৈরি চলছেই ।দিব্যেন্দু বলেন ,‘যেসব দ্রব্য ব্যবহার করে ওই মদ তৈরি হয় তা মানব শরীরের পক্ষে হানিকর বলেই তারা মনে করেন।সেই কারণে এই চোলাই মদ খেয়ে যদি শান্তিপুর কিংবা সংগ্রামপুরের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। ’
অপর আর এক বাসিন্দা দেবাশিষ ঘোষ বলেন ,‘দীর্ঘদিন ধরেই হৈবতপুর এলাকায় দামোদরে অবৈধ বালি খাদান ও চোলাই মদের কারবার চলেছে ।ওই চোলাই মদের বর্জ ফেলা হচ্ছে দামোদরে । তার ফলে দামোদরেও দূষণ বাড়ছে ।প্রশাসন কড়া পদক্ষেন না নিলে এইসব অবৈধ কাজ কোন দিনও বন্ধ হবেনা।’
জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন ,“দামোদরের চড়ে অবাধে চোলাই মদ তৈরি হচ্ছে এমন ঘটনা জানা নেই । তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি ।ঘটনা যদি সত্যি হয় তবে সবিস্তার উচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে । পাশাপালি কড়া আইনানুগ পদক্ষেপও নেওয়া হবে । ”